উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার কৃষকরা রোপণ করেছে রোপা আমন ধানের চারা। ইতোমধ্যে নজর কাড়ছে সবুজের সামাহার। অধিক ফলন ঘরে তোলার লক্ষে শুরু হয়েছে ক্ষেত পরিচর্যাসহ সার প্রয়োগ। সেই সঙ্গে পোকার আক্রমণে যেন ফসলের ক্ষতি না হয়, সেজন্যে স্থাপন করা হচ্ছে পার্চিং। অর্থাৎ গাছের ডাল বা কঞ্চি পুঁতে পাখি বসার ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এই পার্চিংয়ে বসিয়ে ক্ষতিকারক পোঁকা দমন করছে ঝাঁক-ঝাঁক পাখি।
রংপুর, কুড়িগ্রাম,লালমনিরহাট, দিনাজপুর,জয়পুরহাট ও গাইবান্ধার কৃষকের ধান ক্ষেতে দেখা গেছে- পার্চিং বসানোর চিত্র। এরই মধ্যে একদল ফেচকা পাখি উড়ে এসে জুড়ে বসেছে এই পার্চিংয়ে। ওঁৎপেতে এসব পাখি দমন করছে ক্ষতিকারক পোঁকা। যার কারণে ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রোপা আমন ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে পার্চিং পদ্ধতি একটি সফল প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে সহজে ক্ষতিকারক পোঁকা নিধন ও আর্থিক সাশ্রয় হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এই পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে। এতে কীটনাশক ছিঁটিয়ে পোঁকা দমনের প্রয়োজন হয় না। এখন প্রকৃতির মুক্ত পরিবেশে উড়ন্ত পাখি যেন কৃষকের পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রংপুরের পীরগাছার আরাজি প্রতার বিষু কৃষক আইয়ুব আলী জানান, চলতি মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরা ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বোরো আবাদে খরচ বেশি হচ্ছে তার। তাই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং স্থাপনের মাধ্যমে পাখি দিয়ে পোঁকামাকড়র দমন করছেন।
দিনাজপুরের চিরির বন্দরের শহরের ক্বরবালার কৃষক সাইফুল ইসলাম নামের আরেক কৃষক বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে পার্চিংয়ে বসে বসে পাখিরা পোঁকা খায়। এতে করে ফসল ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছি। তেমনি আর্থিক সাশ্রয়ও হচ্ছে।
রংপুরের পীরগাছার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনছার আলী বলেন, মাজরা পোঁকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। একদম পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি। জমিতে চারা রোপণের এক সপ্তাহের মধ্যে এক বিঘা জমিতে ৭ থেকে ১০টি ডাল মাটিতে পোঁতা যাবে। এ নিয়ে কৃষকদের আগ্রহ করে তোলা হচ্ছে। সম্পাদনা- শেখ মোস্তারি জান্নাত।