নগরীতে ভোর রাতে ক্যানসারে আক্রান্ত বৃদ্ধ’র বসতবাড়ি সন্ত্রাসী কায়দায় দখলসহ নগদঅর্থ স্বর্ণ অলঙ্কার ও ১২ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করার অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না পুলিশ। ৬দিন থেকে এক কাপড়ে মানবেতর জীবন যাপন,বসতবাড়ি উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
১৮ নভেম্বর ২০২৩ ইং শনিবার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ভুক্তভোগী ওই পরিবার মহানগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের নিউ সেনপাড়া করনজাই রোডের স্থায়ী বাসিন্দা।
প্রতিপক্ষ শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে ক্যানসার রোগে আক্রান্ত এ.টি এম তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া হোসেনের লিখিত বক্তব্য সূত্রে জানাগেছে, সুমাইয়ার বৃদ্ধ বাবা তোফাজ্জল হোসেন দীর্ঘদিন যাবত ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। সম্প্রতি গত ২৮/১০/২৩ইং তারিখে তোফাজ্জল হোসেনকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা স্ব-পরিবারে ঢাকায় যায়।
এই সুযোগে প্রতিপক্ষ পীরগঞ্জ উপজেলার ওসমানপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম মিয়ার ছেলে শরিফুল ইসলাম (সাংবাদিক) সহ অজ্ঞাত আরো ১০/১৫জন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে অতর্কিত ভাবে গত ১২/১১/২৩ইং রাত ৪ টার দিকে তাদের বাড়ির গেটের তালাসহ ঘরে প্রবেশের ৪টি তালা ভেঙে পুরো বাড়িটি দখলে নিয়ে নেয়। এবং তাদের শয়ন ঘরসহ সুমাইয়ার বড় চাচা এটি এম লুৎফর রহমান এর রুমের তালা ভেঙে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে এবং পুরো বাড়িসহ ও সংসারের ব্যবহার্য যাবতীয় মুল্যবান মালামাল ও শয়ন রুমের আলমারীর ভিতরে থাকা ৬ ভড়ি ওজনের স্বর্নালংকার (চেইন, লকেট, আংটি, কানের দুল) ও তার বাবার চিকিৎসার জন্য গচ্ছিত নগদ ১,২৫,০০০/-টাকা, ব্যাংকের চেকসহ অনেক মুল্যবান জিনিসপত্র এবং বাড়ীতে প্রায় ১০/১২ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র জবর দখলে নেয়।
সন্ত্রাসী তান্ডবের হৈ হুল্লোড়ে তোফাজ্জল হোসেনের প্রতিবেশী মাইনুর রহমান, দ্বীনবন্ধু সরকার, ইকবাল জাভেদ শেখ, তাসকিকুর রহমানসহ আরো অনেকে এগিয়ে আসলে তাদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন।
তাৎক্ষনিক প্রতিবেশী লোকজন তোফাজ্জল হোসেনের মেয়েকে ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সন্ত্রাসীদের তান্ডব তুলে ধরেন। এবং ৯৯৯ নাম্বারে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ তাৎক্ষনিক উপস্থিত হলেও পরবর্তীতে অজানা কারনে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া হোসেন বলেন,আমার বাবার চিকিৎসার তাগিদে স্ব-পরিবারে ঢাকায় থাকায় আমাদের নিকট আত্মীয় ইকবাল জাবেদ, দীনবন্ধু সরকার,তাসকিকুর রহমান দুঃসাহসীক সন্ত্রাসী হামলার বিবরণ তুলে ধরে সকালে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি এখন পর্যন্ত আমলে নেয়নি।
পরে আমরা ১৪/১১/২০২৩ তারিখ রংপুরে এসে আমার বাড়ীতে গেলে প্রতিপক্ষ শরিফুল ইসলাম বাড়ির মালিকানা দাবি করে তার স্ত্রীসহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানি করে আমাদের বাড়ি থেকে আমাদের তাড়িয়ে দেন। পরে জানতে পারি আমার বাবাসহ ওই এলাকার আরো ৬/৭টি পরিবারের সাথে জমির মালিকানা নিয়ে অভিষেক করনজাই ও অনিমেষ করনজাইদের দীর্ঘদিন যাবত মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে যার মামলা নং ৩৪/১৩। যা এখন পর্যন্ত বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। মামলা চলাকালীন অবস্থায় আমাদের প্রতিপক্ষ অভিষেক করনজাই ও অনিমেষ করনজাইয়ের নিকট শরিফুল গং কোন অদৃশ্য ছত্রছায়ায় প্রায় পনে ৫ কোটি কালো টাকা ব্যয়ে জটিল তর্কিত জমি ক্রয় করেন।
আবার সেই সম্পত্তি কোন নোটিশ ছাড়াই প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে, নিশি রাতে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের ৭০ বছরের পুরনো বসবাসরত বাড়ি দখল করেন।
এঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার মা-তহমিনা বেগম বাদী হয়ে ১৭/১১/২৩ইং শুক্রবার সকালে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন আমাদের মামলার বিষয়টি আমলে নেয়নি।
এদিকে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে সহ আমাদের পরিবারকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র সহ হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছে।
আমি ও আমার মা সহ ক্যানসারে আক্রান্ত বৃদ্ধ বাবা এক কাপড়ে অতি মানবেতর জীবনযাপন করছি।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঘটনার প্রত্যেক্ষদর্শী শাহিনুর রহমান শাহিন, মমতাজ উদ্দিন, সোহেল মিয়া, শাহিল মিয়া,ব্রেভ মিয়া সহ আরো অনেকে।
এঘটনার বিষয়ে শরিফুল ইসলামের নিকট তার ব্যবহারকৃত মোবাইল ফোন নাম্বার ০১৭৭৬-৮৬২৩৫৬ একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন আমরা এজাহার পেয়েছি এবং বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ক্ষতিয়ে দেখছি।