আগামী ৭ জানুয়ারী আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে লালমনিরহাট- ১ সংসদীয় আসন হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম এলাকার নেতা কর্মীদের ব্যাপক গণসংযোগ, জনসভাসহ ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন প্রার্থীরা। ৫ বছর পর আবার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নিজ নিজ প্রার্থীকে জয়ী করার প্রতিযোগিতায় নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে এ আসনে। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও এই আসনে আওয়ামীলীগ সহ অন্যান্য দলের ৮ জন প্রতিনিধি মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ে প্রার্থীতা বাতিল ও মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার শেষে চুড়ান্ত পর্যায়ে ৫ জন প্রতিনিধি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি আতাউর রহমান প্রধান (ঈগল ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর হাবিব মো: ফারুক (মশাল), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আজম আজহার হোসেন (মোমবাতি) ও কে এম আমজাদ হোসেন তাজু (ট্রাক)।
এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধান ও কে এম আমজাদ হোসেন তাজু আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ছিলেন গত কয়েকমাস থেকে মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগ চালিয়ে আসছে। অন্যজন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান যার তেমন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়না।
এলাকার উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় মোতাহার হোসেন এগিয়ে থাকার কারন হিসেবে জানা গেছে, লালমনিরহাট-১ হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্যাপারে তেমন কোন আগ্রহ দেখায়নি অতীতের কোনো সরকার। এ কারনে এলাকার জনগনের বিভিন্ন অভিযোগ ও আক্ষেপ ছিল। ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন নির্বাচিত হয়ে জনগনের অভিমান,অভিযোগ ও আক্ষেপ গুলোকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দুই উপজেলার উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন শুরু করে। এলাকার অচলাবস্থার অবসান ঘটায়। শুরু হয় বিভিন্ন প্রান্তের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড। পাশাপাশি এলাকার জন্য বিশেষ কিছু প্রকল্প বরাদ্দ নিয়ে আসেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। তার কারনেই উত্তর জনপদে সরকারের অনেক উন্নয়নই দৃশ্যমান হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান পুরোপুরি বদলে যাবে।
এছাড়াও হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, আধুনিকায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পরিসরে কাজ করছেন। লালমনিরহাট জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা নদী উন্নয়নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীতকালে নদীতে পানি নেই, হেঁটেই পার হওয়া যায়। শীত মৌসুমে ভারত থেকে যে পানি আসে তা খুব সামান্য। এই পানি ক্যানেল দিয়ে প্রবাহিত হলেও এতে কৃষি ফসলের কাজ হয় না। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলের মানুষ যথেষ্ট উপকৃত হবে।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার কৃতিসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন। মাধ্যমিকে লেখাপড়া করার সময় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং লেখাপড়া শেষ করার পূর্বেই রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৬ সালে নেতা হিসেবে ঐতিহাসিক ৬ ছফা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এ ছাড়া ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন লে: কর্নেল মোতাহার হোসেন। চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পরবর্তীতে পরপর দু’বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য সহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন পদে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। মঙ্গা,খরা,নদীভাঙ্গন সহ করনাকালীন সময়ে নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে সবসময় জনগনের দাঁড়িয়েছেন।
হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় যেখানে ৫/৬টি আঞ্চলিক সড়ক পাকা ছিল, সেখানে বর্তমানে প্রায় ৯০% সড়ক পাকা হয়েছে। হাতীবান্ধায় ২ টি নতুন ইউনিয়ন গঠন (সানিয়াজান ও ফকিরপাড়া)। রাস্তা, সেতু, পুল, কালভাট প্রভৃতি প্রতিটি গ্রামে সকলের দৃশ্যমান। শিক্ষার মান উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি কাজ করছেন, দেশের ইতিহাসে তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করন করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র,ছাত্রীদের জন্য বছরের শুরুতে বই,বৃত্তি ও বিস্কুট প্রদান। সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপনা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল কলেজের বহুতল ভবন নির্মান, আলিমুদ্দিন ডিগ্রী কলেজ ও এস এস উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারী করণ। তিনি এলাকায় ৯০% বাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে অন্ধকারে থাকা হাতীবান্ধা পাটগ্রাম বাসীকে করেছেন আলোকিত।
শ্রেনীভেদে বিভিন্ন ভাতা চালুকরণ। কৃষকদের কৃষি পুর্নবাসন সহ বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে সহয়তা প্রদান। অসহায়দের আর্থিক সাহায্য প্রদান। উপজেলা পরিষদ ও থানা ৪ তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন নির্মান, হাতীবান্ধা হাইওয়ে থানা, ফায়ার সার্ভিস স্থাপন, ৬১ তিস্তা ব্যাটালিয়ান, রেল লাইন সংস্কার, রেল ষ্টেশনে আধুনিক প্লাটফর্ম নির্মান, বিভিন্ন সরকারী অফিসে আধুনিক ভবন নির্মান। সারাদেশে ৪৫টি উপজেলার মধ্যে হাতীবান্ধা উপজেলায় আইএসপিপি-যত্ন প্রকল্প ও বেকার যুবক,যুবতীদের জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের বাস্তবায়ন। হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় মডেল মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা নির্মাণ, এলাকার হাট বাজার উন্নতি করণ সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এ আসনে যা উন্নয়ন হয়েছে তা মোতাহার হোসেনের হাত ধরেই হয়েছে। সৎ ও যোগ্য সহজ-সরল মানুষ হিসেবে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন। এলাকায় রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। রাজনীতি করার পাশাপাশি তিনি সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন সবসময়, দুর্দিনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলেন, আগামীতেও থাকবেন। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে দলকে সুসংগঠিত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ও ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার সকল উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের সাথে জড়িত। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তার প্রতিদান দিবে।