খুলনাঞ্চল চিংড়ির জন্য খুবই বিখ্যাত। জিআই পণ্য চিংড়ি বাংলাদেশের হোয়াইট গোল্ড হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা হতে চিংড়ি দেশের নানা প্রান্তে সরবরাহ করা হয় এবং বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিশয় মুনাফার লোভে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অপদ্রব্য জেলি পুশ করে চিংড়ির ওজন বৃদ্ধি করে আসছে ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে চিংড়ির রং আকর্ষণীয় করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬, সিপিসি-৩, যশোর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বিপুল পরিমাণ চিংড়িতে ইনজেকশনের মাধ্যমে অপদ্রব্য জেলি পুশ করে মাছের ওজন বৃদ্ধি করত: অস্বাস্থ্যকর ভাবে বাজারজাত করণের উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমান জেলি পুশ চিংড়ি নিয়ে সাতক্ষীরার হইতে ০২ টি (চাপাই ট্রাভেলস ও চাপাই এক্সপেস নামক) বাস যশোর মনিহার মোড় হয়ে চাপাইনবাবগঞ্জ যাইতেছে। উক্ত সংবাদের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারী রাত ১১.১০ টা হতে ১৫ ফেব্রুয়ারী রাত ০১:৪০ টা পর্যন্ত র্যাব-৬, সিপিসি-৩, যশোর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল এবং যশোর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ এর সমন্বয়ে যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানাধীন মনিহার মোড়ে অস্থায়ী চেকপোষ্ট বসিয়ে চিংড়ি মাছ ভর্তি উল্লেখিত চাপাই ট্রাভেলস ও চাপাই এক্সপেস নামক ০২ টি বাস থামিয়ে বাসের বক্সে ও ছাদে রাখা ককসিটে সংরক্ষিত চিংড়িতে ইনজেকশনের মাধ্যমে অপদ্রব্য জেলি পুশ করেছে কিনা তা চেক করেন। এ সময় উক্ত চাপাই ট্রাভেলস বাসে ০৯ টি ককসিট ও চাপাই এক্সপ্রেস বাসে ০৮ টি ককসিট, মোট ১৭ টি ককসিট ভর্তি চিংড়ি, যার প্রতিটি ককসিটে আনুমানিক ৩৫ কেজি করে মোট আনুমানিক ৬০০ কেজি চিংড়িতে ইনজেকশনের মাধ্যমে জেলি পুশ করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
চিংড়ি মাছে অপদ্রব্য জেলি পুশ করার প্রমাণ পাওয়ায় মৎস্য ও মৎস্য পণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) বিধি মালা ১৯৯৭ (সংশোধিত বিধিমালা ২০০৮) এর বিধি ৪(৪), ৫(৯) লংঘন করায় উক্ত বিধিমালার বিধি ৪(৫), ৫(১০) এর প্রদত্ত ক্ষমতা বলে উদ্ধারকৃত ককসিট ভর্তি জেলি পুশ চিংড়ি জব্দ করা হয় এবং উক্ত চাপাই ট্রাভেলস বাসের মালিক মোঃ ওয়ালিদ’কে ২০ হাজার টাকা ও চাপাই এক্সপ্রেস বাসের মালিক মোঃ মোরছেদ’কে ২০ হাজার টাকা, মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও ভবিষ্যতে অপদ্রব্য জেলি পুশ চিংড়ি পরিবহন থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
জরিমানাকৃত টাকা বিধি মোতাবেক সরকারী কোষাগারে জমা করা হয়েছে এবং জব্দকৃত অপদ্রব্য জেলি পুশ চিংড়ি উপস্থিত জনগণ, মৎস্য কর্মকর্তা সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণের সম্মুখে ধ্বংস করা হয়েছে।