নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বাদল উদ্দিন নামে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে পথরোধ করে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ২ পুলিশ কনস্টেবল ও এক সোর্সের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদল উদ্দিন বাগাতিপাড়া উপজেলার রহিমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। তিনি বর্তমানে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদল উদ্দিন বলেন, রোববার স্কুল ছুটির পর মোটরসাইকেলে নাটোর শহরের বাসায় ফেরার পথে বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে রহিমানপুর ও জিগরীর মধ্যবর্তী ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল সজিব খান ও কনস্টেবল মো. আসাদুজ্জামান এবং পুলিশের স্থানীয় সোর্স বিদ্যুৎ আমার পথরোধ করে।
এরপর কনস্টেবল সজিব খান আমার হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে ফেলে আর বিদ্যুৎ নামের ওই ছেলেটা রড দিয়ে বেধরক মারপিট করতে থাকে।
তাদের আঘাত সহ্য করতে না পেরে দৌড়ে পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসায় আশ্রয় নিলে এক মাদ্রাসার শিক্ষকের সামনে গিয়ে পুলিশের দুই সদস্য আমাকে বলে তোর কাছে মাদক আছে। পরে তারা তল্লাশি করার নামে নিজেদের কাছে থাকা দুইটা কাগজ (পুরিয়া) বের করে বলে এর কাছে হিরোইন পাওয়া গেছে।
শিক্ষক বাদল উদ্দিন বলেন, তারপর আমাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে থানায় নিয়ে যাবে বলে। আমি বলেছি চলেন যাই। কিছুদূর যেতেই গাড়ি থামিয়ে বলে ২০০০ টাকা দিলে তারা আমাকে ছেড়ে দিবে। আমি বলেছি আমার কাছে ওতো টাকা নেই। একথা বলতেই আমার মানিব্যাগে থাকা ৪০০ টাকা নিয়ে ২০০০ টাকা বিকাশ নাম্বার পাঠাতে বলে আমাকে ছেড়ে দেয়। পরে তারা বেশ কয়েকবার টাকার জন্য ফোন করেছে কিন্তু আমি টাকা দেয়নি। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাটোর সদর হাসপাতালে এসে ভর্তি হই।
তিনি আরো বলেন, রহিমানপুর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনির উদ্দিনের সাথে তার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব চলে আছে। সেকারণে ওই প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসেই এই হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষকের।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. আসাদুজ্জামান জানান, একটা ইনফরমেশন ছিলো তাই আমরা এসে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম। এরমধ্যেই বিদ্যুৎ এসে মারধর শুরু করে। সেসময় ওই শিক্ষকের কাছ থেকে কাগজ বের করে বললো ২ পুরিয়া হিরোইন পাওয়া গেছে। পরে তাকে কিছুদূর নিয়ে যাওয়া পর আরও দুইজন শিক্ষক বাদলকে ছেড়ে দিতে বললে আমরা ছেড়ে দিয়ে চলে আসি। আর ওই কাগজ ওসি স্যারের হাতে দিয়ে দিয়েছি।
বাগাতিপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নান্নু খান জানান, মাদকের ইনফরমেশন পেয়ে ২ পুলিশ কনস্টেবল একজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলো। এসময় বিদ্যুৎ নামে এক সোর্স ওই শিক্ষককে মারধর করতে থাকে। পরে তার কাছ থেকে ২ পুরিয়া হিরোইন পাওয়া গেছে বলে দাবি ওই দুই কনস্টেবলের। পরে তারা আসামীকে ছেড়ে দিয়ে আসে।
ওসি বলেন, দুই পুলিশ সদস্যের সামনে একজনকে মারধর করলো, পুলিশ সদস্যরা চুপ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর ভেতর এক পুলিশ কনস্টেবল থানায় ১টা কাগজ (পুরিয়া) জমা দিয়েছে। তাতে হিরোইন আছে কিনা সেসব পরীক্ষা করলে জানা যাবে।