চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে মানুষকে সেবা দিচ্ছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলা উদ্দিন ।ভূমি সেবা নিয়ে ভয় কেটে গেছে উপজেলার মানুষের। ভূমির মালিকদের আস্থার স্থলে পরিণত হয়েছে ভূমি অফিস। কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া সেবা পাচ্ছেন ভূমি মালিকরা। এ কারণে সাধারণ মানুষের কাছে জনবান্ধব অফিসে পরিণত হয়েছে সীতাকুণ্ড ভূমি অফিস।
সেবা নিয়ে আসা ব্যক্তিরা বলছেন এসব কথা।
উপজেলার পাশে সীতাকুণ্ড সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস।
সোমবার অফিসের মূল গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলা উদ্দিন নিজ কার্যালয়ের বাইরে খোলা স্থানে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে আছেন। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন প্রায় অর্ধশত সেবা গ্রহীতা ।
এক এক করে প্রত্যেকের সঙ্গে তাঁদের সমস্যা নিয়ে কথা বললেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। পরামর্শ বা সমাধান করে দিচ্ছেন।
ভূমিসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন মহিন উদ্দিন । তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সর্বশেষ সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে দেখা করে তাঁর সমস্যার কথা বললে তিনি তাতক্ষণিক সমস্যা সমাধান করে দেন।
লায়লা জানান দীর্ঘ দিন পর সর্বশেষ সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সংশ্লিষ্ট সহকারীকে নামজারির নির্দেশ দেন। পরে মাত্র ১১৫০ টাকা সরকারি ফি দিয়ে নামজারি খতিয়ান হাতে পেয়েছেন।
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জনগণের কাছেসহজে সেবা পৌঁছে দিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজ অফিস কক্ষের বাইরে খোলা স্থানে এভাবে প্রতি সপ্তাহের সোমবার গণশুনানি করেন। এমনকি সেবাপ্রার্থীরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত সেবা নির্বিঘ্নে পাচ্ছেন কি না তা পর্যবেক্ষণের জন্য ভূমি অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কক্ষেও ভিডিও ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
অফিস সূত্রে জানা যায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলা উদ্দিন এ পর্যন্ত আদালতের জাল আদেশ দাখিল, জাল ওয়ারিশ সনদ, জাল দলিল দিয়ে নামজারী সৃজিত খতিয়ান বাতিলের আদেশ দেন।
এ ছাড়া সমুদ্র থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটা, মাটি কাটা, পুকুর ভরাট, সরকারি সম্পত্তি দখলসহ অপরাধে দণ্ড ও জরিমানা করেন।
বর্তমান ভূমি সেবা নিয়ে জানতে চাইলে সেবাপ্রার্থীএক জন বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলা উদ্দিন সীতাকুণ্ডে আসার পর থেকে পাহাড়খেকো, ভূমিখেকো, দালালরা আতঙ্কে রয়েছেন। মানুষের দোরগোড়ায় ভূমি সেবা পৌঁছে দিতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। ভূমি সেবা ও আচরণে সন্তুষ্ট। শুধু ভূমি সেবা নয়, সরকারি স্বার্থ লঙ্ঘিত হলে অনিয়মের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলা উদ্দিন বলেন, ‘জনবান্ধব জনসেবা নিশ্চিত করতে আমি বদ্ধপরিকর। একজন মানুষও যাতে ভোগান্তির শিকার না হয় সে জন্য ভূমি অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী তৎপর রয়েছেন। আমরা সব সময়ই চেষ্টা করি সর্বোচ্চ সেবা দিতে।’
সরকারি ভূমিখেকো, দালাল ও প্রতারকদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এত কিছু করার পরও যাদের অবৈধ নামজারির তদবিরসহ অন্যান্য আবেদন মঞ্জুর করা না হয়, কেবল সেসব দালালই ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার করে। তবে আমরা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি এবং সাধারণ মানুষ দোয়া করছে। এটিই আমার পাওয়া। এ সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’