পানির সংকটে থাকা এলাকাগুলো হলো মোহাম্মদপুর, আদাবর, মনসুরাবাদ, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মালিবাগ ও গুলবাগ। গ্যাসের সংকটে আছেন মুগদা, মান্ডা ও মানিকনগর এলাকার বাসিন্দারা। একদিকে গরম পড়তে শুরু করেছে, অন্যদিকে চলছে পবিত্র রমজান মাস। এর মধ্যে গ্যাস ও পানির সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মানুষ। ইউএনবি
ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের এলাকায় পানির সংকট এতটাই প্রকট যে তিন দিন অন্তর ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ লাইনে পানি আসে।
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা রুমানা রামাহমান বলেন, কয়েকদিন পর পর পানি এলেও তার সঙ্গে আসে বালু।
তিনি জানান, তারা একাধিকবার ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও সমস্যা সমাধান হয়নি।
আরেক ভুক্তভোগী শেওড়াপাড়ার মনিরুজ্জামান বলেন, ওয়াসার লাইনে পানি সরবরাহ না হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন মেটাতে বিকল্প উৎস থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়।
মাঝেমধ্যে আমরা মধ্যরাতে ওয়াসার লাইন থেকে পানি পাই, তবে খুব কম চাপে।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ও অ্যান্ড এম) প্রকৌশলী এ কে এম সহিদ উদ্দিন সমস্যার কথা স্বীকার করেন।
তবে ভোক্তাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ওই সব এলাকায় কিছু পাম্প অকেজো হয়ে গেছে। আমরা সেগুলোর কয়েকটি মেরামত করেছি এবং অন্যগুলো প্রতিস্থাপন করেছি। এখন সেখানে পানির কোনো সমস্যা নেই।
প্রকৌশলী এ কে এম সহিদ উদ্দিন আরও বলেন, মাঝে মাঝে কিছু গ্রাহক গণমাধ্যমের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় না। অনেক সময় নিজেদের বাড়ির পাম্প নষ্ট হয়ে গেলেও ওয়াসার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভোক্তারা।
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা শহরে পানির চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি নেই। বরং পানির চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বেশি।
ঢাকা ওয়াসার তথ্য বলছে, বর্তমানে ঢাকা শহরে প্রতিদিন পানির চাহিদা ২৬০ কোটি লিটার এবং ওয়াসার উৎপাদন সক্ষমতা ২৯০ কোটি লিটার।
কিন্তু যৌক্তিকভাবে পানি সরবরাহের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় কোনো এলাকার গভীর পানির পাম্প অকেজো হয়ে গেলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট দেখা দেয়। এর মূল কারণ ভূগর্ভস্থ উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা।
গ্যাস সংকট সম্পর্কে মান্ডা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন জানান, দিনের বেশিরভাগ সময়ই ওই এলাকায় গ্যাস থাকে না।
তিনি বলেন, আমরা তিতাস পাইপলাইনে রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত গ্যাস পাই।
এই গ্যাস সংকট জাতীয় গ্রিডের সার্বিক ঘাটতির অংশ বলে স্বীকার করেছেন তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা।
তারা জানান, দেশে গ্যাসের চাহিদা প্রতিদিন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোবাংলা প্রায় ২ হাজার ৬৬০ এমএমসিএফডি সরবরাহ করতে পারে। ফলে প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ এমএমসিএফডি। সূত্র- আমাদের সময় ডটকম।