রংপুর মহানগরীর কেডিসি রোডস্থ বাফার (সার) গোডাউনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একদিকে অবরোধ অন্যদিকে হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হচ্ছে ট্রাক ড্রাইভার এবং লেবারদের। সাধারান মানুষ জীবিকা নিবারনের তাগিদে অবরোধের মাঝে জীবনের ঝুকি নিয়ে বরিশাল, নোয়াখালী, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ট্রাক ড্রাইভারদের হয়রানির শিকারের সম্মুক্ষিন হতে হয় রংপুর বি,সি,আই,সি বাফার গোডাউনে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে কেডিসি রোডস্থ বাফার গোডাউনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাক ড্রাইভার ও লেবাররা আন্দোল করছেন।
আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা যায়, গোডাউনে ট্রাক ড্রাইভার মনিরুল, কামাল, জাহিদুল-১, জাহিদুল-২ ভিতরে প্রবেশ করলে তাদেরকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এখানে আরো অভিযোগ উঠে সকাল ১০টার সময় কাজ শুরু করার কথা থাকলেও গাড়ি লোড-আনলোড ১২ টার পরে শুরু করে, গাড়ি লোড-আনলোডের সময় ড্রাইভার-হেলপারদের থাকতে দেয়া হয়না, গাড়ি লোড-আনলোড করার পরে লেবারদের বকশিশ দিতে হয় ১৩০০-১৩৫০ টাকা, আনছারদের ১৫০ টাকা, গেট দিয়ে বের হতে ২০ টাকা (যা অমানবিক) এগুলো কারণে ট্রাক ড্রাইভার-লেবারকে বিরোক্ত বোধে পড়তে হয়। অবরোধের সময় বিকালে লোড দেয়া হলে সেই গাড়ি রাত্রে যদি বের হয় তবে গাড়ির নিশ্চয়তা কে দিবে, যদি রাস্তায় কোন দূর্ঘটনা হলে এর দায় কে নিবে। তাই এর সুস্থ সমাধান চান অভিযোগকারীরা।
এ ব্যাপারে ট্রাক ড্রাইভার মনিরুল, কামাল, জাহিদুল বলেন, আমরা ট্রাক নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করার পর আমাদেরকে গোডাউন হতে বের করে দেয়া হয়, তারা আমাদের ভিতরে থাকতে দেয়না। সারের বস্তা যদি কম দেয় এর দায়িত্ব কে নেবে। বিকেলে সার লোড দেয় রাত্রে আমাদেরকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বের হতে হয়। আমরা পড়েছি বেকায়দায়। এর একটা সুস্থ সমাধান হওয়া উচিত।
জেলা ট্রাক ড্রাইভার সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা গোডাউনে সারের জন্য এসে সারাদিন আবার রাতো চলে যায় সার পাইনা। আবার সার পেলেও লেবারদের ১৩৫০ টাকা, আনছারদের ১৫০ টাকা, গাড়ি বের করতে হলে ২০ টাকা করে বকশিশ দিতে হয়।
তাহলে আমাদের লাভ কোথায় থাকবে। এ সমাধান হওয়া জরুরী।
ট্রাক ড্রাইভার খলিল মিয়া জানান, আমরা দুদিন আগে ভারা নিয়ে আসছি গুদামের ভিতরে গাড়ী নিতে দেয়নি, বাফার ইনচার্জকে বিষয়টি বললে গালাগালি করে বের করে দিয়ে গেটে তালা মারে। দুদিন থেকে অনাহারে আছি গোসল পযন্ত করতে পারিনাই, এখান কার আনসার পযন্ত গালাগালি করে বেশি কিছু বললে মামলার হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, এর আগে গুদামে গাড়ী আনলোড করার পর বকশিশের টাকা দুই হাজার দািব করে এবং জোর পূর্বক নেয়। গুদামের গেট পার হলে সেখানেও পঞ্চাশ থেকে একশত টাকা না দিলে গাড়ী বেড় হতে দেওয়া হয় না।
ট্রাক ও ট্যাংকলরী লালবাগ কেডিসি গোডাউন শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ বলেন, প্রতিনিয়ত অফিসের সাহেব, লেবার, আনছার অনিয়ম করছে। এর আগেও সমস্যা হয়েছিলো, প্রতিনিয়ত হচ্ছে এর সমাধান হওয়া উচিত।
লেবার শ্রমিক নেতা মুছা বলেন, আমরা লোকাল ড্রাইভারের কাছে বকশিশ পাইনা বাইরের গাড়ি হতে বকশিশ নেই আগে ১২০০ টাকা নিতাম এখন একটু বেশী নেই। এখন দ্রব্য মূল্যে দাম বেশী, এখানে একটন সার লোড-আনলোড করলে পাই ৩০ টাকা তাহলে আমাদের এতগুলো পেট কেমনে চলবে। তাই এদের কাছে কিছু নিয়ে পেট চালাই।
আনছার ব্যাটালিয়ানের এপিসি আফজাল বলেন, আমরা কাউকো চাপদিয়ে টাকা নেইনা। চা খাওয়ার জন্য যে যা দেয় তাই গ্রহণ করি। ১৫০ টাকার তথ্য সত্য নয়।
রংপুর জেলা ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ন আহবায়ক আবুল কাশেম বলেন, আমি অভিযোগগুলোন শুনেছি। আমরা তো আর প্রশাসন নই যে ব্যবস্থা নিবো। তবে মানবিক দিক থেকে আমরা বসে এর সমাধান করবো, সামনে যেনো আর সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
বাফার গোডাউনের ডিপুটি ম্যানেজার ফয়সাল আহমেদ, সাংবাদিকদের ১ম দিকে গোডাউনে প্রবেশে বাধাঁ প্রদান করেন। বিসিআইসি’র অনুমোতি নিতে বলেন। বিসিআসি’র কারো মোবাইল নাম্বার চাইলে তা দিতেও অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। ঢাকায় গিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলতে বলেন জেলা প্রশাসককে ফোন দিলে তিনি জানতে পেরে অফিস কক্ষে ডাকেন।
পূণরায় বলেন আমি বিসিআইসি’র অনুমোতি ছাড়া কিছুই বলতে পারবোনা আপনারা ঢাকায় গিয়ে যোগাযোগ করেন, ফোন নাম্বার চাইলে তিনি দিতে চাননা। তাকে অনুমতি নেয়ার কথা বললে সেটাও তিনি করেন না।
সর্ব শেষ ডিপুটি ম্যানেজার বলেন, আমি নিয়ম মাফিক অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করি। ড্রাইভার-হেলপার আগে ভিতরে থাকতো, তারা ভিতরে জুয়া খেলে, নেশা খায় তাই তাদের আর গোডাউনের ভিতরে থাকতে দেয়া হয় না। আর বকশিশের ব্যাপারে আমি বলতে পারবোনা। এটা লেবার কন্ট্রাক্টার আছে উনি যানে। কিছুদিন আগে কয়েকজনের নামে মামলা করা হয়েছে তারাই বাইরে আন্দোলন করছে। তারপরও এর সমাধান করা হবে।
লেবার কন্ট্রাক্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি বিকেলে অফিস গিয়ে ব্যবস্থা নিবো।